একই পরিবারের তিনজন প্রতিবন্ধী পেল ঈদ উপহার

শফিকুল ইসলাম খোকন

এক পরিবারের তিন সদস্য। অন্য পরিবারের সদস্যদের মতো নয়; তিনজনই প্রতিবন্ধী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনম ব্যক্তিও পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। গ্রামের দশজনের সাহায্যে চলে আরিফ হোসেনের সংসার। কপালে তাদের সুখতো নেই, মুখে হাসিও নেই।বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্রা গ্রামের আরিফ হোসেন, বয়স ২৫ বছর। জন্ম থেকেই দুই পা বিকল। পা দুটো পঙ্গু হওয়াতে জন্মের তিন বছরের মাথায় আরিফকে মা সালমা বেগম ফেলে রেখে চলে যায়। জন্মের পর থেকেই আরিফের ভাগ্য অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে; বাবাও মারা যাওয়ায় একমাত্র অভিভাবক বৃদ্ধা দাদি। বিয়ের বয়স হওয়ার আগেই মানসিক প্রতিবন্ধি কহিনুর বেগমের সাথে বিয়ে হয়।

বিয়ের ৪ বছরের মাথায় এক কন্যা সন্তান নাজমুন্নাহার (২) জন্মগ্রহণ করে। নাজমুন্নাহারও অটিজম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।পরিবারের একমাত্র উপার্জনম ব্যক্তি আরিফের দুই পা বিকল হওয়াতে হাটাচলা করতে পারছেনা। অন্যের সাহায্যে বা লাঠির সাহায্যে হাটাচলা করতে হয়। গ্রামের দশ জনের চাল, ডাল ও আর্থিক সাহায্যে চলছে আরিফের সংসার। প্রতিদিনের সংসার চলাই দায়… আবার ঈদের আনন্দ এ যেন আরিফের জন্য সোনার হরিণ।

তবে এবার ঈদ উপহার পেয়ে আরিফ ও তার পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে।শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে আমেরিকান ভিত্তিক ‘সাদাকাহ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আর্থিক ঈদ উপহার নগদ টাকা প্রদান করা হয়। আরিফ হোসেনের হাতে নগদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রুহুল আমিন, সমাজসেবক মো. শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক ইমরান হোসাইন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ‘সাদাকাহ’ পক্ষে সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন।যেখানে নিজের উপার্জনে কোন মতাই নেই সেখানে ঈদের পোষাক ও ঈদ সামগ্রী কেনার জন্য নগদ অর্থ পেয়ে খুশি আরিফ হোসেন।

আরিফ হোসেন বলেন, আমি জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধি, স্ত্রীও কথা বলতে পারছেনা, একমাত্র কন্যা সন্তানও অটিজম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। নিজেদের পেটই চলেনা সেখানে ঈদ দিয়া কি করমু। ঈদের উপহার নগদ টাকা পেয়ে আমি খুবই খুশি। বাচ্চাডারে নতুন জামা কিনা দিতে পারমু।আরিফ আরও বলেন, বাবার রেখে যাওয়া একখন্ড জমি, ভাঙাচোরা ঘর। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সরকারের কাছে স্থায়ী পুনর্বাসন ও স্থায়ী উপার্জনের পথ চান তিনি।

‘ইউপি সদস্য রুহুল আমিন ও সমাজসেবক শহিদুল ইসলাম বলেন,আমাদের এলাকাবাসির সাহায্যেই আরিফের সংসার চলে। আমরা চেষ্টা করছি আরিফকে স্থায়ী জীবিকার পথের ব্যবস্থার জন্য। সাদাকাহ সংস্থানে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের ডাকে সারা দিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে আরিফের হাতে নগদ টাকা দেয়ার জন্য।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.