মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার অরও একজন

পাথরঘাটা প্রতিনিধি :

বরগুনার পাথরঘাটায় মা সুমাইয়া (১৮) ও মেয়ে সামিরা আক্তার জুঁইকে (৯ মাস) হত্যার পর মাটিতে পুঁতে রাখার মামলার আরেক আসামি মো. রিমনকে (১৯) গ্রেফতার করেছে বরগুনা সিআইডি পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (৯ এপ্রিল) বরগুনার পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক মো. রাসেল মজুমদার আসামিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ নিয়ে ওই হত্যা মামলার ৪ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার পাথরঘাটা ইউনিয়নের হাতেমপুর গ্রাম থেকে রিমনকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পর থেকে রিমন পলাতক ছিলো।

২০২১ সালের ৩ জুলাই পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতেমপুর গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনা ঘটে। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী খালের পাড় থেকে মাটি খুড়ে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় সেদিন ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক শাহিনের মা শাহিনুর বেগম (৪০), নানি জাহানারা বেগম (৫৫) ও ফুফাতো ভাই ইমাম হোসেনকে (২২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নানি জাহানারা বেগমকে ছেড়ে দেয় এবং বাকি দুই জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।

পরে ওই মামলা সিআইডিতে স্থানান্তর করা হলে তারা তদন্ত শুরু করেন। মা-মেয়ে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ঘাতক শাহিন মুন্সীকে ২০২১ সালের ১২ জুলাই গ্রেফতার করে সিআইডি।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সাহিন ও সুমাইয়ার মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। বিয়ের আগেই তাদের শারীরিক সম্পর্কের কারণে বাচ্চার জন্ম হয়। এ নিয়ে পাঁচ মাস কারাভোগের পর আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলতে থাকে। কলহর জেড়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়।

২০২১ সালের ৩০ জুন দুপুরে সুমাইয়ার বাবার বাড়িতে তাদের দাওয়াত ছিল। কিন্তু সাহিন সেখানে যাননি। দুপুরে দাওয়াত খেয়ে সুমাইয়া তার স্বামীর বাড়িতে আসার পর থেকেই নিখোঁজ হন। ঘটনাটি পরদিন থানা পুলিশকে জানালে তারাও বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নেয়। এরপর থেকেই স্বামী সাহিন লাপাত্তা হয়ে যান এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন।

ঘটনার দুই দিন পর ২ জুলাই রাতে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাহিনের মা এবং নানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনো তথ্য না পাওয়ায় দুই দিনের মধ্যে শিশুকন্যাসহ পুত্রবধূকে খুঁজে আনার জন্য তাদের বলা হয়। এলাকাবাসীকেও অনুসন্ধান করতে বলা হয়। পরে ৩ জুলাই সকালে বাড়ির পাশের মাটি খুড়ে মা ও শিশু কন্যার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বরগুনা সিআইডির উপ-পরিদর্শক সুরজিৎ বলেন, পাথরঘাটার মা-মেয়ে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার সর্বশেষ আসামি রিমনকে আটকের পর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.