নিহত প্রকৌশলী হাদিসুরের ভাই তরিকুল বিএসসিতে যোগদান করেছেন

এম.এস রিয়াদ

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে গোলার আঘাতে নিহত নাবিক থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মেজ ভাই তরিকুল ইসলাম আজ ১ জুন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন খুলনা মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে যোগদান করেছেন বলে মুঠোফোনে নিশ্চিৎ করেন তার ছোট ভাই গোলাম মাওলা পিন্স।

তরিকুল ইসলাম আগামী রোববার (৫ জুন) নিয়মিত অফিস করবেন। তিনি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন খুলনা মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত থাকবেন।

০১ জুন গোলাম মাওলা প্রিন্স এর ফেইচবুক পেইজে দেয়া একটি স্ট্যাটাস থেকে জানাগেছে বিএসসিতে তরিকুলের যোগদানের বিষয়টি।

তার ফেইচবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল- “আজকে সবচেয়ে যে বেশি খুশি হতো সেই লোকটা আমাদের মাঝে আর নেই। তৃতীয় প্রকৌশলী মরহুম হাদিসুর রহমান ভাই তোকে খুব মনে পরে। আলহামদুল্লিাহ মেজ ভাইয়ের জয়েনিং। চলতি বছরের ২ মার্চ যুদ্ধকবলিত ইউক্রেনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) এর মালিকানাধীন জাহাজ “এমভি বাংলার সমৃদ্ধি” এ রকেট হামলায় নিহত আমার বড় ভাই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ হাদিসুর রহমান মারা যান। এ সময় আমি আমার ভাইয়ের লাশ দেশে আনার জন্য বিভিন্ন অফিস আদালতে যোগাযোগ সহ আমার পরিবারকে আকরে ধরে রাখতে চেষ্টা করি।

এসময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী সহ বিভিন্ন অফিস আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন প্রিন্স হতাশা হয়েও না। তোমার ভাই হাদিসুর রহমান বাংলাদেশের সম্পদ ছিল। তোমার ভাইয়ের লাশ বাংলাদেশ আসবে এবং তোমার পরিবারের দ্বায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নিবে। কিছুটা দেরিতে হলেও আমার সাথে দেওয়া কথাগুলো নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী সহ বিভিন্ন অফিস আদালতের কর্মকর্তা -কর্মচারী গন দ্বায়িত্ব সহকারে একের পরে এক পালন করতে আছে এজন্য আমি আমার পরিবারের পক্ষথেকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিএসসি, ইঙগগঅ, মেরিনের সকল বড় ভাই সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।”

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএসসি পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে বিমা কোম্পানি থেকে হাদিসুরের পরিবারের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বিএসসির মালিকানাধীন ওই জাহাজে কর্মরত অন্যরা সাত মাসের বেতন পাবেন।

এ ছাড়া নিহত হাদিসুর রহমানের পরিবার পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় পাঁচ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে, সেই সঙ্গে তার ভাইকে বিএসসিতে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী ১ জুন তিনি বিএসসিতে যোগ দেবেন।

হাদিসুরের মেজ ভাই তরিকুল ইসলাম পটুয়াখালী সরকারি কলেজের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী।

এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’।সেখানে নোঙর করা অবস্থায় গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান।

মৃত্যুর ১২ দিন পর সোমবার দুপুর সোয়া ১২টা ২০ মিনিটের দিকে তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আনা হয়। এরপর রাত ১০টার দিকে হাদিসুরের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। মরদেহ আসার পর স্বজন, এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.