নিরাপত্তা চেয়ে সময় টিভির সাংবাদিকের জিডি

স্টাফ রিপোর্টার :

পরীক্ষাকেন্দ্রে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করায় হামলা-মারধরসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের হুমকি দেওয়া হয়েছে সময় টেলিভিশনের বরগুনার রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম মিরাজকে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ফেসবুক ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন মিরাজ। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে সাধারণ ডায়েরির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে অস্বচ্ছতা এবং অনিয়ম নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সময় টেলিভিশনে একটি সংবাদ প্রচারিত হয়। ওই সংবাদের জেরে কলেজের হিসাব রক্ষক এনামুল হক সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম মিরাজের উপর হামলা ও মারধরসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হুমকি দেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়। এর প্রতিকার চাওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তিনি বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

মিরাজ জানান, গত বুধবার (১৪ জুন) বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে সংবাদ সংগ্রহে যান তিনি। এ সময় পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের পরিবর্তে হল পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করতে দেখেন কলেজের হিসাব রক্ষক এনামুল হক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক শিমুলী আক্তারকে। তাদের সামনেই নকল করে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন পরীক্ষার্থীরা। এসব দেখেও কোন ধরনের ব্যবস্থায় দিচ্ছিলেন না তারা। বরং সময় সংবাদের ক্যামেরায় নকল করার দৃশ্য ধরা পড়লে পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে হল থেকে বের করে দেন তারা। যার পুরো দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, পাবলিক পরীক্ষার আইন লংঘন করে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছাড়াই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেন কলেজের কর্মচারী এনামুল হক ও শিমুলী আক্তার। রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছাড়াই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা সময় টেলিভিশনের ক্যামেরায় অকপটে স্বীকার করেন খোদ পরীক্ষার্থীরা। অন্যদিকে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে না পারলেও কলেজের কর্মচারী হয়েও হল পরিদর্শকের দায়িত্ব পালনের কথা সময় টেলিভিশনের কাছে অকপটে এনামুল হক এবং শিমুলী আক্তার। আর এসব অভিযোগের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় মিরাজকে অনবরত হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা চলছে। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হোসেন বলেন, বরগুনা কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে অনিয়মের একটি সংবাদ সময় টেলিভিশনে তিনি দেখেছেন। সংবাদের পুরো বিষয় যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তা নিঃসন্দেহে শিউরে ওঠারমত ঘটনা। পরীক্ষার হলে কোনভাবেই এ ধরনের অন্যায় এবং অপকর্ম মেনে নেয়ার মত নয়। ঘটনাটি ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। শীঘ্রই এ ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আলী আহম্মেদ বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হামলা, মারধর ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের হুমকি এবং ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টার প্রতিকার চেয়ে বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম মিরাজ। ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.