শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ শিশু শ্রম প্রতিরোধ আবশ্যক

সুজিয়া মনি

“ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে”- অর্থাৎ শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজ যারা শিশু আগামী দিনে তাদের উপরই ন্যস্ত হবে দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব। কিন্তু নানা কারণে শিশুরা আজ উপযুক্ত পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত। জীবিকার প্রয়োজনে তারা শ্রম দানে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমানে অনেক শিশুর সুন্দর শৈশব ও বিকশিত জীবনের সবচেয়ে বড় বাধা এ শিশুশ্রম।

১৮ বছরের কম বয়সি সকলেই শিশু। যে সকল শিশু বেঁচে থাকার অধিকার, নিরাপত্তা লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে কায়িক শ্রমে নিয়োজিত তারাই শিশুশ্রমিক। আয় করার জন্য কাজ করতে গিয়ে শিশুরা তাদের বয়স অনুযায়ী বিপদ, ঝুঁকি, শোষন, বঞ্জনা ও আইনের জটিলতার সম্মুখীন হয়।

বাংলাদেশের শহর অঞ্চলে প্রায় ৩০ ধরনের অর্থনৈতিক কাজে শিশুরা যুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কুলি, হকার, রিক্সা শ্রমিক, ফুল বিক্রেতা, আবর্জনা সংগ্রহকারী, হোটেল শ্রমিক, মাদক বাহক, বিড়ি শ্রমিক, ঝালাই কারখানার শ্রমিক, বোডিং সেন্টারের শ্রমিক। শিশুরা কর্মে নিয়জিত হওয়ার পরিনতি তাতক্ষণিকভাবে লাভবান হলেও এর প্রভাব যথেষ্ট মারাত্মক। কেননা শিশু শ্রম শিশুর শারিরীক, বুদ্ধিভিত্তিক, আবেগগত, সামাজিক ও নৈতিক জীবনকেও বিষিয়ে তোলে।

শিশু শ্রমের কারনে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও অকালে ঝরে পড়ছে। এতে বাংলাদেশ হারাচ্ছে তরুণ ও শিক্ষিত যুবক। এই কোমলমতী শিশুরা কেবল শিক্ষা তেকেই নয়, এরা স্বাস্থ্যগত দিকেও ঝুঁকিতে থাকে। শিশুশ্রম শিশুদের শারীরিকভাবে দুর্বল করে দেয়। যার ফলে পুষ্টিহীনতায় ভোগে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। শিশুশ্রম মানবাধিকার ভঙ্গের এক নিকৃষ্ট ব্যবস্থা। এটি একটি বেআইনী কাজ সত্ত্বেও আমাদের দেশে শিশুশ্রমের তালমাতাল অবস্থা বিরাজমান।

খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, চিত্ত বিনোদন ইত্যাদি থেকে সুবিধাবঞ্চিত থাকে এসকল কোমলমতী শিশুরা। শিশু শ্রম প্রতিরোধ করার মাধ্যমে শিশুদের মৌলিক চাহিদা পূরণের অধিকার নিশ্চিৎ করতে এ সমাজেরই দায়িত্ব। আসুন শিশুশ্রমকে না বলি, শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি।

লেখক : শিক্ষার্থী, জিওলজি বিভাগ, পটুয়াখালী সরকরি কলেজ।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.