ভারপ্রাপ্ততেই চলছে বেতাগী সরকারি কলেজ

শাহাদাত হোসেন

দশ মাস ধরে অধ্যক্ষ ছাড়াই চলছে বরগুনার বেতাগী সরকারি কলেজ। নতুন অধ্যক্ষের পদায়ন না হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।

প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ অধ্যক্ষ ছিলেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. নুরুল আমিন। তিনি ২০২১ সালের আগস্টে বদলি হয়ে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে যোগদান করেন । এরপর থেকে কলেজের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক আবদুল ওয়ালিদ ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।

বেতাগী সরকারি কলেজ সূত্রে জানা যায়, অর্ধশতক ধরে এই অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে বেতাগী সরকারি কলেজ। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে যাত্রা করে ১৯৮৫ সালে স্নাতক (পাস) কোর্স চালু করে। ১৯৮০ সালে এমপিওভুক্ত হওয়ার পর ২০১৫ সালে কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) কোর্সসমূহে প্রায় ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পাঠদান করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রভাষক আবদুল ওয়ালিদ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পরপরই কলেজের কার্যাদি সম্পাদনের জন্য আর্থিক ক্ষমতা চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের আগস্টে অধিদপ্তর তাঁকে সাময়িকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বেতন-ভাতা ও সম্মানীসহ আনুষাঙ্গিক বিলসমূহ স্বাক্ষরদানের ক্ষমতা প্রদান করে।

এদিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে সরকারিকৃত কলেজগুলোর অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের শূন্যপদের তথ্য চেয়ে গত ২৯ মে চিঠি দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু ইমেইলে তথ্য দেয়ার নিয়ম থাকলেও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল ওয়ালিদ ফোনে বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালককে সেই চিঠির জবাব দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, কলেজের অধ্যক্ষ হতে হলে একজনকে অধ্যাপক হতে হবে। একজন অধ্যাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তা একটি কলেজ যেভাবে পরিচালনা করতে পারেন, একজন প্রভাষক কিংবা সহকারী অধ্যাপকের পক্ষে সেভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। বর্তমানে বেতাগী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছামত কলেজ চালাচ্ছেন। কলেজে নতুন অধ্যক্ষ আসুক তিনি তা চান না।

বেতাগী সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মাহাতাব উদ্দিন বলেন, আমাদের এই কলেজটি সদ্য সরকারিকৃত কলেজ। আগে কলেজে গভর্নিংবডি ছিল, অধ্যক্ষও ছিল। এখন কলেজে কিছুই নাই। শুধু একজন লেকচারার দ্বারা কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। এজন্য এখন একজন সুযোগ্য অধ্যক্ষ আমাদের দরকার। কিন্তু অধ্যক্ষ যেন নিয়োগ না হয় সেজন্য আমাদের কিছু প্রতিনিধি তদবির করছে।

তবে অধ্যক্ষ না থাকাতে কলেজের কোন অসুবিধা হচ্ছেনা জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল ওয়ালিদ বলেন, সরকার কলেজে অধ্যক্ষ না দিলে আমাদের করার কি আছে।

তিনি আরো বলেন, অধক্ষ্যের পদায়নের বিষয়ে মন্ত্রী, সচিব ভাল বলতে পারবে। মন্ত্রণালয় থেকে অধক্ষ্যের শূন্য পদের তথ্য চেয়ে যে চিঠি দেয়া হয়েছে, ফোনের মাধ্যমে আঞ্চলিক পরিচালককে সেই চিঠির জবাব দিয়েছি। আমি আমার যোগ্যতা অনুযায়ী কলেজ চালাচ্ছি। আমি বলবো কলেজ খুব ভাল চলছে।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.