বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনায় ১৫ আগষ্ট শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বেধরক লাঠিপেটা ও এমপির সাথে ঔদ্ধত্য আচরণের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীসহ ১৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়াও পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সতর্ক করেছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিআইজি আক্তারুজ্জামান জানান, ঘটনার দিন (১৫ আগষ্ট) সোমবার রাত ১০টার দিকে বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ জিয়াউল হক পিপিএমকে প্রধান করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বাকেরগঞ্জ সার্কেল) সুদীপ্ত সরকার পিপিএম।
একই সঙ্গে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস এম তারেক রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের অপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উভয় কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বুধবার (১৭ আগস্ট) তিনি নিজেও (ডিআইজি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ডিআইজি জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী, ২জন ইন্সপেক্টর, ৩জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ৭জন কনস্টেবলসহ মোট ১৩ পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো ৫ পুলিশ সদস্যকে সতর্ক করার জন্য বরগুনা জেলা পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে।
মহরম আলী ছাড়া বাকি পুলিশ সদস্যদের নাম গণমাধ্যমকে জানাতে রাজী হননি ডিআইজি আক্তারুজ্জামান।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট দুপুরে বরগুনার শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ইট পাটকেল নিক্ষেপের সময় পুলিশ বেধরক লাঠিপেটা করে। এতে অন্তত ২শ’ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আহত হন। ঘটনাস্থলে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটার কারণ জানতে চাইলে এমপি শমভুর সাথে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী বাকবিতন্ডা করেন এবং তাঁর সামনেই জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লার ভাই জসীম মোল্লাকে পিটিয়ে আটক করে নিয়ে যান।
ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে এমপি শমভু বরগুনা প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুত এবং অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
পরেরদিন ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জেলা আওয়ামী লীগ। এতে মহরমের চাকরিচ্যুত ও বিচার দাবি করে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
পরে ১৭ আগস্ট বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান পরিদর্শনের জন্য বরগুনায় আসেন এবং ঘটনায় জরিত পুলিশ সদস্যদের বিচারের আশ্বাস দেন।