মো: সানাউল্লাহ্ রিয়াদ :
দীর্ঘ নয় মাস এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ফলে বাঙ্গালী পেয়েছে একখন্ড মানচিত্র, স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব একটি লাল-সবুজ পতাকা। যে পতাকা বাংলাদেশ নামক একটি দেশের পরিচয় বহন করে বিশে^র দরবারে জানান দিয়ে দেয় একটি ভূখন্ডের অবস্থান সম্পর্কে। যে যুদ্ধ ছিলো পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানের। আজ সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান’র নাম এ দেশের বীর বাঙ্গালিরা বুকের তাঁজা রক্ত আর মা-বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে মুছে দিয়ে পরিচয় নিয়ে এসেছেন নতুন রুপে। সেই থেকে নাম হল বাংলাদেশ।
যেই বীরদের কারনে আজ বাঙ্গালি পেয়েছে নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলার সুযোগ, চাকুরির সুযোগ, পড়ালেখাসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা। পেয়েছে মৌলিক কিছু চাহিদা। যা পূরণ করবে এ রাষ্ট্র। এ দেশের রয়েছে বীরত্বগাঁথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস; রয়েছে ভাষার জন্য আন্দোলন ও সবথেকে দামি নিজের জীবনকে বিসর্জণ দেয়ার মতো বাস্তব গল্প। কেবল ভাষা আন্দোলন নয়, এখান থেকেই শুরু হয়েছে নানাবিধ ইতিহাসের পাতার কালো অধ্যায়। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গণ-আন্দোলন, ৭০ এর সাধারণ নির্বাচন আর ৭১ এর অসহযোগ আন্দোলন এর মহান ইতিহাস। আর এ ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে ১১ টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বরগুনার স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে গল্প শোনানো এবং এ গল্প থেকে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে তথ্য অফিস।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এর জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে বুধবার (৩০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ১১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে আলোচনা সভা, যুদ্ধকালীন বীরত্বগাঁথা গল্প বলা ও শেষে কুইজ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এ ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন- আলোচনা সভার প্রধান অতিথি বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা: রফিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন- বঙ্গবন্ধু যে সুখি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছেন, তা নতুন প্রজন্মকেই গড়তে হবে। তাই জানতে হবে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস। একই সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে থাকতে হবে দেশের জন্য মমত্ববোধ, মনুষ্যত্ব ও সুন্দর গুণের অধিকারী।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফয়সাল আহমেদ’র সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বরগুনা জেলা তথ্য কর্মকর্তা সেলিম মাহমুদ।
এসময় শিক্ষার্থীদের সামনে মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা করেন- বরগুনা জেলার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মৃধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কে.এম আব্দুর রশীদ। উপস্থিত ছিলেন- বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক মো: দেলোয়ার হোসেন রাড়ীসহ ১১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
স্বাধীনতার মহান স্থপতি বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষ্যে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।