স্টাফ রিপোর্টার
বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিসাখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম ও তার ভাই পিরোজপুর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে সম্মেলন করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল পাঁচটার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট মোঃ নুরুল ইসলাম।

তিনি তার লিখিত অভিযোগে বলেন, গুলিশাখালি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম ও তার ভাই পিরোজপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার তাদের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন রকম দুর্নীতি ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ সহ ভুয়া অতি হতদরিদ্র ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিকের নামের তালিকা তৈরি করে। যার অধিকাংশ ব্যক্তি সরকারি চাকুরিজীবী, অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী, জুয়েলারির মালিক, গার্মেন্টসের দোকানদার ও প্রবাসী একই পরিবারের মা ও দুই ছেলের নামে ৬৬ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে।
মনির ও তার ভাই আব্দুস ছত্তার ছাড়াও ওই ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন খোকন এর বিরুদ্ধেও ভুয়া নাম এর তালিকা প্রস্তুত করার অভিযোগ রয়েছে।
ইতোপূর্বে, এ সকল কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কারণে বিভিন্ন পত্রপত্র পত্রিকা এবং ৩৬০ শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত অনুসন্ধানী রিপোর্টের পরেই এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার’র বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ২০২১ সালের আগস্ট মাসের ১১ তারিখ একটি বিভাগীয় মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও তাকে পিরোজপুর জেলা থেকে দুইবার বদলি করা হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে আজ পর্যন্ত পিরোজপুরেই কর্মরত রয়েছেন।
গুলিশাখালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম এর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ইটভাটা, তরমুজ ক্ষেতের মালিক এবং পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করারও অভিযোগ তোলা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে এসকল অভিযোগের পাশাপাশি ইউপি চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে শামসু পঞ্চায়েত, শহিদুল চৌকিদার, সোহরাব চৌকিদার, জাহাঙ্গীর বয়াতি, খোকন বয়াতি, রাজ্জাক বয়াতি, জসিম চৌকিদার ও লিটন জোমাদ্দারের নাম প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন- এই চেয়ারম্যান মুজিব বর্ষের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উপহার দেওয়া ঘরে গভীর নলকূপ দেয়ার কথা বলে ওই ইউনিয়নের সুফলভোগীদের থেকে ১৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। জেলেদের নামের তালিকা থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে ভুয়া নামের তালিকা করে চাল আত্মসাৎ করেছে। গর্ভবতী মা, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও মাতৃত্বকালীন ভাতা সহ সকল প্রকার ভাতার টাকা প্রকৃত ভাতা ভোগীদের নাম না দিয়ে স্বজনপ্রীতি করে ও টাকার বিনিময়ে নাম অন্তর্ভুক্ত করে আত্মসাৎ করেছেন।
আলহাজ্ব এডভোকেট মোঃ নুরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যের বাইরেও অভিযোগ করে বলেন- বিভিন্ন সিম ব্যবহার করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার সিম বন্ধ করে রাখেন এই ইউপি চেয়ারম্যান।
এমন সব দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।