ইফতেখার শাহীন
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা শিক্ষা অফিসার টিএম শাহ আলমের বিরুদ্ধে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষকদের কাছ থেকে জোড়পূর্বক চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছগির হোসেন ২১ এপ্রিল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষা অফিসার শাহ আলমের দূর্নীতির খতিয়ান উল্লেখ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মহা পরিচালক বরাবর একখানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের বিবরনে জানা যায়, টিএম শাহ আলম ২০২২ সালের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে পাথরঘাটা উপজেলার ১৪৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১২’শ টাকা হারে চাঁদা দিতে বাধ্য করেন।
গত ২১ সালে করোনাকালিন সময়ে উপজেলায় উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত হলে ৫’শ টাকা, অডিটের কথা বলে ৪’শ ৫০ টাকা এবং বর্তমান বছরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পাথরঘাটায় আসলে প্রতি বিদ্যালয় থেকে ১’শ ৭০ টাকা হারে ১৪৯ টি বিদ্যালয় থেকে চাঁদা দিতে বাধ্য করেন।
শিক্ষা অফিসার শাহ আলম ডেপুটেশন চালু না থাকলেও মোটা অঙ্কের বিনিময়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে না জানিয়ে নিজের খেয়াল খুশী মতো শিক্ষক ডেপুটেশন প্রদান করেন।
এছাড়াও শাহ আলমের বিরুদ্ধে আরও অনেক দূর্নীতির খতিয়ান অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন তিনি।
অভিযোগ পত্রের ভিত্তিতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাধারণ শিক্ষকরা এতদিনে ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও সাংবাদিকদের কাছে শিক্ষা অফিসার শাহ আলমের চাঁদাবাজীর সত্যতা স্বীকার করেন।
চাঁদা তোলার সত্যতা স্বীকার করে পাথরঘাটা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, টিইও স্যারের নির্দেশে সুবর্ন জয়ন্তী উপলক্ষে একটি কমিটি গঠন করে ৬ টি ক্লাষ্টারে ৬ জন শিক্ষককে চাঁদা তোলার জন্য নিযুক্ত করা হয়। তারা পাথরঘাটার প্রত্যেকটি বিদ্যালয় থেকে ১২’শ টাকা হারে চাঁদা তুলে ওই কমিটিতে জমা দিয়েছেন।
জানতে চাইলে, পাথরঘাটা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: ছগির হোসেন বলেন, পাথরঘাটা উপজেলার শিক্ষকরা ভালো নেই। শিক্ষা অফিসারের ভয়ে কেউ মুখ খোলেনা। আমি তার দূর্ণীতির প্রতিবাদ করলে আমার উপরে তিনি বিভিন্ন হয়রানিমূলক অভিযোগ উত্থাপন করেন। আমি চাই এই দূর্ণীতির বিচার হোক। তাই আমি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মহা পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
চাঁদা উত্তোলনের ব্যাপার অস্বিকার করে পাথরঘাটা উপজেলা শিক্ষা অফিসার টিএম, শাহ আলম বলেন, আমি কোন শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলিনি। শিক্ষকরা চাঁদা দিয়ে সুবর্ণ জয়ন্তী মেলা উদযাপন করেছে।
এবিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা জালাল উদ্দিন বলেন, কোন প্রশ্নই ওঠেনা চাঁদা উত্তোলন করে এসকল অনুষ্ঠান পালন করবে। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।