স্টাফ রিপোর্টার
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বরগুনার নিচু এলাকার পথ-ঘাটসহ ফসলের মাঠ। বৃষ্টির পানি জমেছে তরমুজের ক্ষেতেও। ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় মাঠেই নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার তরমুজ। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
জানা গেছে, জেলার অধিকাংশ ক্ষেতের তরমুজ বিক্রি হয়ে গেছে। তবে সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিমতলী বালিয়াতলী ইউনিয়নের খাকবুনিয়া, আমতলী, চৌমুহনীসহ কয়েকটি এলাকায় তরমুজ এখনও ক্ষেতেই রয়ে গেছে। কয়েক দিন পর বেশি লাভে এসব তরমুজ বিক্রি করার কথা ছিল।
বুধবার সকালে সরেজমিনে বরগুনা সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নীমতলী ও বালিয়াতলী ইউনিয়নের খাকবুনিয়া এলাকায় দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টির পানিতে তরমুজের ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। এসব পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান পানি জমা হয়েছে ক্ষেতে। কৃষকরা ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে রাস্তার ওপর স্তূপ করে রেখেছেন। কেউ আবার পানিতে ডুবে থাকা তরমুজ কেটে নৌকায় তুলছেন। ক্ষেতসহ তরমুজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় লাখ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
খাকবুনিয়া এলাকার কৃষক জলিল মৃধা বলেন, ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয় করে তরমুজ আবাদ করেছি। ফলন মোটামুটি ভালো ছিল। ভাবছিলাম ১০-১৫ দিন পর বিক্রি করব। তাই ফল কাটিনি। কিন্তু গত দুই দিনের বৃষ্টিতে সব শেষ। এখন এই তরমুজ ২ লাখ টাকায়ও বিক্রি করতে পারব কি না সন্দেহ আছে।
নিমতলী গ্রামের আল আমিন হোসেন বলেন, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ১৬ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। বৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় এখন ১০ হাজার টাকাও বিক্রি করা যাবে না। হঠাৎ বৃষ্টির ব্যাপারে কষি অফিস আমাদের সতর্ক করেনি। সতর্ক করলে হয়ত এত ক্ষতি হতো না।
আরেক চাষি আবুল কালাম বলেন, আমি ৪ লাখ টাকা ব্যয় করে তরমুজ চাষ করেছিলাম। কয়েক দিন পর ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু বিক্রি করার আগেই বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু সৈয়দ জোবায়দুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টিপাতে তরমুজ ছাড়া অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি হয়নি। যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হবে। পরে এসব কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হবে। লোকবল সঙ্কটের কারণে মাঠ পর্যায়ে অনেক কাজই করতে পারছি না আমরা।