“ভোট চুরি, দুর্নীতি ও দুঃশ্বাসনের বিরুদ্ধে খেলা হবে”- ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার

বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বক্তব্যের শুরুতে ‘তোমার রক্তে রঞ্জিত আজও শস্য, শ্যামল বাংলা, ভুলিতে পারিনি, ভুলিতে পারিবোনা আমরা। জীবনান্দ দাশের লেখা কবিতার ভাঁজে ‘আবার আসিব ফিরে, দুঃখ ও সুখের বঙ্গোপসাগরের তীড়ে’ এমন পঙ্গক্তি দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন ওবায়দুল কাদের। দুই কবিতার পঙ্গক্তির মাঝে শেখ হাসিনার ম্যাজিক ডিজিটাল বাংলদেশ। পদ্মা সেতু, পায়রা সেতু, কুয়াকাটা সেতু, মেট্রো রেল সহ নানা ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। যার সুফল আপনারা সকলেই ভোগ করছেন। বিএনপি বলেছে পদ্মা সেতু নাকি ভেঙ্গে পরবে। আথচ এর উপর দিয়ে তারা রীতিমতো চলাচল করছে। এখন সরম, লজ্জা লাগে না? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, মির্জা ফকরুল বলেছেন আওয়ামী লীগ নাকি কাপুরুষ। সেজন্য বিএনপিকে হামলা-মামলা দিচ্ছে। হাওয়া ভবনের যুবরাজ ট্যাম্পাস নদীর পাড়ে বসে দলের মহাসচিব ফকরুলের থেকে টাকা নিচ্ছে। আর ফকরুলের দিতে দিতে গলার জোড় আর সুর বদলে গেছে। তাই বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে খেলা হবে। আন্দোলন ও নির্বাচনে খেলা হবে। ভোট চুরি, দুর্নীতি ও দুঃশ্বাসনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খেলা হবে হাওয়া ভবন ও আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। আজকে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষা এই বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ’র সম্মেলন থেকে খেলা হবে। জনগণ মোকাবিলা ও প্রতিরোধ করবে এসব কিছুর বিরুদ্ধে। ছাগল নাচে খুঁটির জোড়ে, তিন নম্বর ছগলের বাচ্চার মতো নাচে। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, খুদিরাম সর্দার। তারা আবার কথা বলছে। এমন সকল মন্তব্য করে বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবার ঘোষণা দিয়ে তিনি দুঃসময়ে যারা পার্টির সাথে ছিলো, তাদের গুরুত্ব দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন সৎ ছিলেন, তেমনি তার কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও তাঁরই মতো সৎ, সততা ও সাহসী বলেই আজ জনগণের মাঝে জনপ্রিয়তা অর্জণ করেছেন বলে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’র সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ’র ৮ম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ১৬ নভেম্বর (বুধবার) দুপুর ১২ টার দিকে সার্কিট হাউজ ঈদগা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ ৮ বছর পর বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ’র এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালিত গান “রক্ত লাল, রক্ত লাল, নোঙ্গর তোলো তোলো, ঢেউ হারা এ ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবরে, মুজিব আমার স্বপ্ন সাহস,” এমন সব গান, রাখাইন ও সাধারণ নৃত্য পরিবশেনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান আলোকময় করা হয়। জেলা সম্মেলনের মূল পর্বের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবশনের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একই সাথে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা ঘটে। এরপরই পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপীঠক পাঠ করে বক্তৃতা শুরু করেন আমন্ত্রীত অতিথিবৃন্দ। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। 

জাতীয় এ নেতা বলেন, যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশে যখন বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা গ্রহন করেছিলেন, তখন টাকশালে টাকা ছিলোনা, খাদ্য ছিলো না। তিনি শুরু করেছিলেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে এ দেশের মানুষের সব আর্তনাদ ও আকাঙ্খা পূরণ। আথচ মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাঁকে হত্যা করা হল। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অনেক সদস্যই সেদিন শহীদ হয়েছেন। এরা আজ গণতন্ত্রের কথা বলে। তিনি বলেন, বিএনপির যারা মিথ্যা কথা বলেছে তাদের গলায় ক্যান্সার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। মন্নান ভুঁইয়া, সালাম তালুকদার সহ অনেককে তিনি উদাহরণ টানেন। আজ স্বাধীনতার পক্ষে ও বিপক্ষে দুটি দল। তিনি এ দেশের জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে শেখ হাসিনার কাজের বর্ণনা দিয়ে বলেন এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আবাও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করতে উদার্ত আহ্বান জানান। 

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবিরের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমেদ, সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু, আনিসুর রহমান প্রমুখ। 

দ্বিতীয় অধিবেশনের মাধ্যমে অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে সভাপতি, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবিরকে সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গোলাম সরোয়ার টুকুর নাম লিখিতভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.