স্টাফ রিপোর্টার
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার দুর্যোগ প্রবণ এবং লবনাক্ত জমিতে স্বল্পজীবনকালের হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা ব্যাপক ফলন পেয়েছে। সূর্যমুখী চাষের সাথে জড়িত পাথরঘাটার কৃষকদের মাঠ দিবসের মাধ্যমে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
রোববার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হাজিরখাল গ্রামের আবদুর রহিম ফরাজী’র সূর্যমুখী ক্ষেতে মাঠ দিবসের আয়োজন করে স্থানীয় সংস্থা সংগ্রাম।
১২৭ কৃষকের উপস্থিতিতে সংগ্রাম কর্তৃক প্রদানকৃত হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমুখীর ক্ষেত থেকে ২০টি ফুল এবং স্থানীয় অন্য একটি ক্ষেত থেকে ২০টি ফুল এনে তার আটি বের করা হয়। আলাদা আলাদা বের করা আটি মেপে দেখা যায় সংগ্রাম কর্তৃক প্রদানকৃত হাইসান-৩৬ জাতের সূর্যমুখীর ফলন পাওয়া গেছে ২ কেজি ৯১৫ গ্রাম। স্থানীয় জাতের ফলন পাওয়া গেছে ২ কেজি ৩৫ গ্রাম। ৮৮০ গ্রাম ফলন বেশী হয়েছে হাইসান-৩৬ সূর্যমুখী জাতের ফসলে। এতে সংগ্রাম কর্তৃক প্রদানকৃত বীজে শতকরা ৪৩% ফলন বেশী পেয়েছে কৃষকরা। অধিক ফলন পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
হাজিরখালে অনুষ্ঠিত এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে সংগ্রা’মর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মাসউদ সিকদার’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন- পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আলমগীর হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন- সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শ্যামল হাওলাদার, চৌধূরী মাসুম কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট’র অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমীন সোহেল, এসিআই বীজ কোম্পানীর প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসার মো. আজাদ মল্লিক।
এসময় বক্তব্য রাখেন- কৃষক আবদুর রহিম ফরাজী, সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মালেক, পেস প্রকল্পের আওতায় ‘সূর্যমুখীর উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে আয়বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি’ উপ প্রকল্পের ভ্যালু চেইন ফেসিলিটেটর মুসলিমা খাতুন।
বক্তারা মনে করেন যুগ যুগ ধরে পরিবেশ পরিবর্তনের এই সংকট মোকাবেলা করে আসছে মানুষ। জীবনের প্রয়োজনে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে পরিবেশ। আবার সেই বিপর্যয়ের মুখেই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকছে মানুষ। এ অবস্থা চলতেই থাকবে। পরস্থিতি মোকাবেলার জন্যে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষিণের লবনাক্ত ও দেরীতে জোঁ আসা মাটিতে সূর্যমুখী চাষ করে উপকূলের কৃষকগণ যেমন লাভবান হতে পারবে, পাশাপাশি তেল ফসল চাষ করে দেশের তেলের ঘাটতি পূরণে অবদান রাখতে পারবে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)’র সহযোগিতায় এবং ইফাদ’র অর্থায়নে সংগ্রাম বাস্তবায়িত ‘সূর্যমুখীর উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে আয়বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি’ উপ প্রকল্পের মাধ্যমে পাথরঘাটা ও বরগুনা সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামের ৬৯৬ জন চাষী এবছর ২৮১ একর ৪৫ শতাংশ জমিতে হাইছান-৩৬ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছে। এই মাঠ দিবস অত্র প্রকল্পের মাধ্যমে আয়োজন করা হয়।