মো: সানাউল্লাহ্ রিয়াদ :
কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪ (ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার কর্তৃক এ নির্ধারিত মূল্য মানছেন না বিক্রেতারা। এছাড়াও ক্রয়কৃত পণ্যের কোন ক্যাশ মেমো দেখাতেও তারা ব্যার্থ হচ্ছে। নেই প্রয়োজনীয় লাইসেন্স। হোটেলগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পচা ও বাসি খাবার। পুরোনো তেল ব্যবহার করে ভাজা হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় ইফতার সামগ্রী। ব্যবহার করা হচ্ছে খাবার বহন করতে কালিযুক্ত প্যাকেট। যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিতে উপযোগী। এতসব আইন লঙ্ঘন করছে বরগুনা শহরের অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও সতর্ক করতে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাঈম-উল ইসলাম চৌধুরী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে শহরের মুরগি বাজার, মিষ্টি পট্টি, বানিয়াতি পট্টি ও স্টার হোটেলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ক্রয়কৃত ক্যাশ মেমো ও লাইসেন্স দেখাতে ব্যার্থ হওয়ায় তিন মুরগি দোকানীকে কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ১৯ (১) ঞ ধারা অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকা করে, স্টার হোটেলে খোলা পরিবেশে পরিবেশিত ইফতার সামগ্রীর মধ্যে অপরিষ্কার অবস্থায় খেজুর পরিবেশন ও ইফতার সামগ্রী ঢেকে না রাখার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫৩ ধারা অনুযায়ী স্টার হোটেলকে ১০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভ্রাম্যমান আদালতের হাকিম বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাঈম-উল ইসলাম চৌধুরী।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন- কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বরগুনা’র জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ আলী আজগর সবুজ ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের বরগুনা জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস মিয়া, উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মোঃ খলিলুর রহমান ও পৌর স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মোঃ ইব্রাহীম খলিল।
এদিকে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হলেও বরগুনা চেম্বার অব কমার্স কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য তালিকায় এর ভিন্নতা দেখা গেছে। যেখানে ব্রয়লার মুরগি খুচরা পর্যায়ে ১৭৫.৩০ টাকা, সোনালী মুরগী ২৬২ টাকা বিক্রির জন্য মূল্য নির্ধারণ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু বরগুনা চেম্বার অব কমার্স থেকে ব্রয়লার মুরগি খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ২০০ টাকা, সোনালী মুরগী ৩২০ টাকা বিক্রির জন্য মূল্য নির্ধারণ করেছে। এতে করে কেবল বিক্রেতা নয়, বিপাকে পড়েছে ক্রেতারাও।
সাধারণ মানুষ বলছে মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ খোলা পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণ করে দিক। কেবল পাইকারী কিংবা খুচরা পর্যায়ে বিক্রির মূল্য নির্ধারণ করলেই হবে না; উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সঠিক মূল্য বেঁধে দিতে হবে। কারণ তাদের থেকে বেশি মূল্যে পণ্য ক্রয় করে কম মূল্যে বিক্রি করলে এতে লস গুনতে হবে খুচরা ব্যবসায়ীদের।
তবে আইন অমান্য করে নয়, বরং মেনে ও সঠিক মূল্যে কেনা-বেচা করতে চান মফস্বলের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সু-নজর দিয়ে দ্রুত ব্যবসায় একটি মনোরম পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন; এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।