স্টাফ রিপোর্টার
তুচ্ছ ঘটনায় বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার তিন শিশুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিরিন নামের এক নারী।
বুধবার ওই তিন শিশু আদালতে হাজির হলে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।
তিন শিশুরা হলো- বেতাগী উপজেলার শামিমের ছেলে শাকিব (৮), রহিমের ছেলে সিরাজ (৯) ও মিরাজ (১১)। তবে শাকিবের বাবা শামিম জেলহাজতে রয়েছেন।
জানা যায়, বেতাগী পৌরসভার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের স্ত্রী শিরিন বাদী হয়ে ৮ জুন চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন- ১৮ মে সন্ধ্যায় বাদীর ৬ বছরের ছেলে নাঈমকে তুলে নিয়ে ওই শিশুরা চড়-থাপ্পড় মারে। লাথি মেরে মারাত্মক জখম করে পা ভেঙে দেয়। বাদী ওই শিশুদের বয়স গোপন করে বেতাগী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্য এজাহার করার নির্দেশ দেন। বুধবার সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে এক শিশু বেতাগী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়। ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের শিশু দেখে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জামিন শুনানির জন্য প্রেরণ করেন।
ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান শিশুদের দেখে উষ্মা প্রকাশ করেন। বিচারক শিশুদের কাছে জানতে চেয়েছে কী অপরাধ করেছে তারা। শিশুরা জানায়- ফুটবল খেলা নিয়ে বাদীর ছেলের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। এর বেশি শিশুরা কিছু বলতে পারেনি।
বিচারক রাষ্ট্র নিয়োজিত বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমানকে বলেন, শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার আগে বয়সের বিয়ষটি বিবেচনায় আনতে হবে। ৮-৯ বছরের শিশুদের মামলায় জড়িত করা ঠিক হয়নি। এরপর বিচারক তিন শিশুকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন।
এ সময় কোর্ট বারান্দায় শিশুদের মা-বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিশু শাকিবকে জানতে চাওয়া হয় তোমরা কোথায় এসেছে। শাকিব বলে মা আমাকে বরগুনায় নিয়ে এসেছে। জজকোর্টে এসেছে কিনা তাও শাকিব জানে না। শিশু মিরাজ বলে আমরা বরগুনা হাজির হতে এসেছি। কেন হাজির হতে এসেছে। এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেনি।
বাদী শিরিন বলেন- ওরাই আমার ছেলে নাঈমের পা ভেঙে দিয়েছে।