সিলেট প্রতিনিধি
টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, বিশ্বনাথ, কানাইঘাটসহ সিলেট সদরের ৮০ শতাংশ এলাকা। বন্যার পানি বাড়তে থাকায় জনজীবন বিপন্ন ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বন্যার পানিতে সিলেট নগরের প্রত্যেকটি সড়ক এখন নদীতে পরিণত হয়েছে! নিজ আশ্রয় ছেড়ে লোকজন নিরাপদ কোনো স্থানে যাবেন, সে ব্যবস্থাও নেই। ফলে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত একালাগুলো থেকে দুর্গতদের উদ্ধার করতে নেমেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি ডুবুরিদল। উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হচ্ছে বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার ও কোস্ট গার্ডের দুটি ক্রুজ।
এরই মধ্যে নৌবাহিনীর ৩৫ সদস্যের একটি দল সিলেটে পৌঁছে কাজ শুরু করেছেন। তবে এ উদ্ধার কাজ কতটুকু সফল হবে, কয়টা মানুষ প্রাণে বাঁচবে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। তাই দ্রুত সিলেট ও সুনামগঞ্জকে বন্যা দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে উদ্ধার তৎপরতায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে সিলেটের উপশহর, দক্ষিণ সুরমা, হাউজিং এস্টেট, জিন্দাবাজার, কদমতলী, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনসহ শহরের ৮০ শতাংশ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় জীবন নিয়ে শঙ্কিত এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা।
তাই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাণে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন তারা। তবে তাদের সেই প্রাণে বাঁচার আকুতি আদৌ কেউ শুনবে কি না? তারা কি প্রাণ বাঁচাতে পারবেন তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
এছাড়া বাসস্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশন বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় সকাল থেকে সারাদেশের সঙ্গে স্থলপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, সিলেটের কুমারগাঁও এলাকায় গ্রিড উপকেন্দ্রে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় দুপুরের দিকে পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সিলেটের বর্তমান বন্যার ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পানি জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকায় প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে শুধু মাত্র প্রাণে বাঁচার আর্তনাদ জানাচ্ছেন দুগর্তরা।
বন্যা কবলিত অনেক এলাকায় লোকজন গবাদি পশু ও বাড়ি-ঘর রেখে প্লাবিত এলাকা ছাড়তে চাচ্ছে না। কিন্তু বন্যার পানি বৃদ্ধির কারণে মানুষের প্রাণ সংহার হতে পারে।