জাহিদুল ইসলাম মেহেদী
উপকূলীয় জেলা বরগুনার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রায় সব নদ-নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পায়রা, বিষখালী, বলেশ্বর ও হরিণঘাটা। এছাড়া খাকদোন, টিয়াখালী নদী, টিয়াখালী দোন, বগীরখাল, বেহুলা নদী, নিদ্রাখালসহ জেলার প্রধান নদী ও খালের এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। কিছু কিছু এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে।
বরগুনার তালতলীতে তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৮টি গ্রাম। সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় রান্না বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক শ’ পরিবারের।
জোয়ারের পানিতে বরগুনার তালতলী উপজেলায় পায়রা নদীর অংশে তেঁতুলবাড়ীয়া এলাকার গ্রাম রক্ষার প্রধান বেড়িবাঁধের ১০০ মিটার এলাকা ভেঙে যাওয়ায় কমপক্ষে ৫০টি মাছের ঘের ও কয়েক শ’ বাড়ি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
জোয়ারের পানির তোড়ে একাধিক স্থাপনা ও বসত ঘর ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে আমনের বীজতলা নষ্ট হওয়ার সঙ্কা রয়েছে। এই ভাঙা বাঁধ এভাবে থাকলে দিনে-রাতে দুইবার পানিতে তলিয়ে থাকবে ৮ গ্রাম। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
অন্যদিকে, এলাকাবাসীকে দ্রুত ভাঙা বাঁধ সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সাদিক তানভীর।
বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী বরগুনা জেলায় বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৩০০ টি প্রাকৃতিক খাল রয়েছে। এ জেলায় মোট ১৬০ বর্গ কিলোমিটার নদী রয়েছে যা জেলার মোট আয়তনের ২২ ভাগ।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপকারী মাহাতাব হোসেন জানান, বরগুনার নদীগুলোর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নদী তীরবর্তী নিচু এলাকার বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
তিনি আরো জানান, বুধবার বিকেল ৪ টার দিকে বিষখালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। যা বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপরে। এতে করে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলগুলোই প্লাবিত হবে।