ইমরান হোসাইন
দক্ষিণাঞ্চলের সামুদিক মাছের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এ বন্ধর থেকে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ সড়ক পথে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু কয়েক দশক দরে ফেরিঘাটে যানজটের কারণে যথাসময়ে গন্তাব্যে পৌঁছাতে পারেননা ব্যবসায়ীরা। অনেক সময় ফেরিঘাটে দিন পাড় হয়ে যায়। এতে মাছের গুনগত মান খারাপ হয়ে যাওয়ায় ভাল দাম পায়না ব্যবসায়ীরা। পদ্মা সেতু চালু হলে মাছের ব্যবসায় আসবে আমূল পরিবর্তন। যার সুফল পাবেন ব্যবসায়ী, জেলে ও শ্রমিকরা।
পাথরঘাটা মৎস্য বন্দর সূত্রে যানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) প্রায় ৪হাজার ৮০০ মেট্রিকটন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি ছিল ইলিশ। অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি করা মাছের ওপর শতকরা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করে সরকার। পদ্মা সেতু চালু হলে আবতরণ কেন্দ্রটিতে সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি বাড়বে। এতে সরকারের রাজস্ব আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ঠরা।
পাথরঘাটা মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা মাছ কিনে বিক্রির জন্য দেশে বিভিন্ন বাজারে পাঠাই। সেখানে পৌছাতে আমাদের ফেরি পার হতে হয়। এতে অনেক সময় লাগে, মাঝে মাঝে ফেরি আটকে সময়মতো বাজার না পেলে অন্য বাজার খুজতে হয়। তাতে ইলিশসহ সব মাছেরই কালার নষ্ট হয়ে যায়। ভাল দামে বিক্রি করা যায়না। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে এসব সমস্যা আর থাকবেনা। আমুল পরিবর্তন ঘটবে এই বন্দরে।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের এই বৃহতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের ব্যবসায় সুদিন ফিরে আসবে। সেতু না থাকায় মাছ কিনে ব্যবসায়ীরা সময়মত গন্তাব্যে পৌঁছাত না। ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এতে মাছের মান নষ্ট হয়ে যায়, মাছের ভাল দাম পাওয়া যায়না। পদ্মা সেতু চালু হলে সকাল-বিকাল গাড়ি যেতে পারবে। এতে প্রতিদিনের মাছ প্রতিদিন বিক্রি হবে। রাজধানীবাসীরাও সমুদ্রের তাজা মাছ খেতে পারবেন।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট এম লুৎফর রহমান বলেন, ফেরিঘাটে যানজটের কারণে সাগরে মাছ শিকার করা অনেক ট্রলার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আসেনা। পাথরঘাটা থেকে ব্যবসায়ীদের মাছ কিনে ফেরি পার হয়ে যেতে হয়। এতে আনেক সময় লাগে, সেই সঙ্গে গুণগতমানও কমে যায়। পদ্মা সেতু চালু হলে এখান থেকে কোনো ফেরি পার হতে হবে না। কম সময়েই দেশের যে কোনো জায়গায় পৌঁছা সম্ভব হবে। তখন বন্দরে ট্রলার আসবে বেশি, ফলে বাড়বে এ অবতরণ কেন্দ্রের রাজস্ব আদায়। এছারা উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার জেলে ও শ্রমিক রয়েছে, তাদের সবার ভাগ্যের বড় একটি পরিবর্তন আনতে পারে এই সেতু।
Spread the love