তিন অভিযানে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষাধিক টাকার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস


জাহিদুল ইসলাম মেহেদী


চলতি সপ্তাহে বরগুনার নদী ও বিভিন্ন খালে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করা হয়েছে। পরে জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।


সোমবার (১৮ এপ্রিল) বরগুনা সদর উপজেলা মৎস্য বিভাগ বিষখালী ও পায়রা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১৫ টি চায়না দুয়ারী অবৈধ জাল জব্দ করে বরগুনার ভারানী খালের খারাকান্দা নামক স্থানে নিয়ে এসে জেলেদের উপস্থিতে আগুনে পুরে ধ্বংস করে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) পাথরঘাটা সংলগ্ন বিষখালী নদীতে অভিযান চালিয়ে ৪০টি অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে পাথরঘাটা কোস্টগার্ড।


এর আগে বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তালতলী উপজেলা মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশের যৌথ অভিযানে অবৈধ ৫৭ টি চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে। পরে জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এ সময় কাউকে আটক করা হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে এলাকার এক শ্রেণির লোকজন বাজার থেকে চায়না দুয়ারী জাল কিনে নদীতে অবাধে মাছ শিকার করে যাচ্ছে। কেউ কেউ নদীর পাড়ে নৌকা নিয়ে টং ঘর বানিয়ে একেবারে জেঁকে বসেছেন। বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ছাড়াও পানিতে বাস করা বিভিন্ন প্রজাতির উপকারি পোকামাকড় ও জালে আটকে যাচ্ছে, ডাঙ্গায় তুলে এসব প্রাণী ও পোকা মাকড় মেরে ফেলছে মাছ শিকারিরা। নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার শুরু হয়েছে কারেন্ট জালের চেয়েও সূক্ষ্ম চায়না জালের ব্যবহার। চায়না দুয়ারী জাল ও কারেন্ট জালে নদ-নদী, খাল-বিল জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক সবধরনের দেশীয় মাছ ধরা পড়ছে চায়না দুয়ারী জালে। এতে করে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদী, খাল-বিল ও ছোট নদীগুলো।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এভাবে মাছ শিকার করা ঠিক না। প্রাকৃতিক সবধরনের দেশীয় মাছ ধরা পড়ছে চায়না দুয়ারী জালে। এভাবে চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর নদীতে আর কোনো মাছ পাওয়া যাবে না। এসব মৎস্য শিকারির জন্য বাজারে এখন দেশীয় মাছ পাওয়া যায় না। মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদীগুলো। নদীতে এখন দেশীয় প্রজাতির মাছ পোনা ছাড়ছে এখনই এই কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারী জালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম জানান, আমাদের বিশেষ মোবাইল কোর্টের অভিযানে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করা হয়েছে। পরে সেগুলো জনসম্মুখে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বরগুনা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ভেসাল ও চায়না জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে শিকারিরা। ফলে বিলুপ্তি ও চরম হুমকিতে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও মাছের রেণু পোনাসহ বিভিন্ন প্রকার জলজ প্রাণী। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ করা জাল জব্দ করতে আমাদের “স্পেশাল ক্যাম্পিং” চলমান থাকবে। অবৈধ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা ও জেলেদের জরিমানা করা হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে জেলার সবগুলো নদীতে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হবে। জব্দকৃত চায়না দুয়ারী জালের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা হবে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.