মোঃ সজল মাহমুদ
দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর তার প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। ফলে নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে আগুন, কোনো কিছুই কেনার মতো অবস্থায় নেয়।
আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১০ টার দিকে বেতাগী বাজার ঘুরে দেখা যায় ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য। আমিষের প্রধান উৎস ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে রেকর্ড ছাড়িয়ে। চাল, ডাল, আটা, চিনি, পেঁয়াজ, মাছ-মাংস ও শাক-সবজিসহ বেশিরভাগ পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে।
কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি ও পাকিস্তানি মুরগির দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি সোনালি ও পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায়। সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিহালি ডিম ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম কমার তালিকায় রয়েছে এমন কোন ভোগ্য ও নিত্যপণ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বেতাগীতে কাঁচা বাজারে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা বাজারে কোন পণ্যের দাম কম নেই, একাধিক পণ্যের এক সপ্তাহের মাথায় দাম বেড়ে দিগুণ হয়েছে।
বাজারগুলোতে ছোট মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। বড় মাছে হাত দেয়া যাচ্ছে না। ইলিশের দাম ভরা মৌসুমেও অনেক বেশি। ১০০০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজি। সামুদ্রিক কিছু মাছ আছে যেগুলোর দাম নাগালের মধ্যে। ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আবার নিম্ন আয়ের মানুষ কেবল আলু আর পিঁয়াজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
দিন মজুর মজিদ বলেন, গরুর মাংস ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। একটা জিনিসই পরিবারের সদস্যরা মিলে খেতে পারতাম। ব্রয়লার মুরগির মাংসটাও এখন আর ঠিকমতো খাওয়া সম্ভব নয়। আর মাছে তো হাত দেয়ার উপায় নেই। ডিমের দাম গত মাসেও হালি ৪০ টাকার নিচে ছিলো। আজ ডিম কিনলাম ৫০ টাকা হালি।
অটো চালক কবির বলেন, ‘মুরগী, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যর দাম বেড়েছে। এভাবে দাম বাড়লে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ কীভাবে চলবে।’
অন্য দিকে দোকানি মালিকরা বলেন, বিক্রেতা সংখ্যাও বাজারে কম। আমাদের আরোতে সকল পণ্যের দাম বেড়েছে এবং জ্বালানি দাম বাড়ায় গাড়িতে কেরিং খরচ বেশি গুনতে হচ্ছে। তাই আমাদের সকল পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বেতাগী কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী মোঃ আলী আকন বলেন , বাজারে সরবরাহ ঠিকই ছিলো কিন্তু হঠাৎ করে তেলের দাম বাড়ায় সব ওলোটপালোট হয়ে গেছে। বাড়তি দামতো ক্রেতার ওপরই বর্তায় সব সময়। কেউ তো আর লস করবে না। এক গাড়ি সবজি আনতে আগে যে টাকা লাগত, তার চেয়ে এখন প্রায় দ্বিগুণ লাগছে। কাজেই সবজির দাম বাড়ছে। শুধু সবজি কেন মাছ মাংস অন্যান্য দ্রব্যাদিও তো গাড়িতেই আনতে হচ্ছে। সুতরাং তেল খরচ লাগছে। আর তেলের দাম তো অনেক বেশি। তাই পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়া অস্বাভাবিক কিছুই নয়।