স্টাফ রিপোর্টার
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ যেন সোনার হরিণ। এগিয়ে থাকা পদ প্রত্যাশী প্রার্থীরা তাদের স্বপ্ন ছুঁই ছুঁই ভাব। ছাত্রলীগ কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে এক ধরনের পাওয়া না পাওয়ার আতঙ্ক। কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আতঙ্ক নয়, সম্মেলন যেন এক উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে হয়; এমনটাই প্রত্যাশা বরগুনা বাসীর।
আসছে ১৭ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। আর এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বরগুনা শহর জুড়ে নেতাকর্মীদের ফেস্টুন, ব্যানার ও পোস্টারে পরিপূর্ণ। প্রতিদিনই মোটরসাইকেল শোডাউন করে পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতারা জানান দিচ্ছে গোটা বরগুনাকে। তখন শোনা যায় স্লোগানে স্লোগানে কাঙ্খিত নেতার নাম ।
জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক তানভির হুসাইনের নেতৃত্বে সম্মেলন প্রস্তুত এর সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে টাউনহলে মঞ্চ সাজানোর কাজ চলছে।
ইতোমধ্যে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ’র দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো: আবদুর রশিদ রাফির হাতে সরাসরি ও অনলাইনে সভাপতি পদে ৩২ ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩১জন মনোনয়নপত্র ক্রয় করে দাখিল করেছেন। এর মধ্যে কোন কোন প্রার্থী দুটি পদেই মনোনয়নপত্র ক্রয় করে দাখিল করেন।
সম্মেলনের পূর্ব প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে ছাত্রলীগের নেতাদের কয়েক দফায় বরগুনায় আসতে দেখা গেছে ।
জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শাহরিয়ার নাদিম বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে সকল কর্মকান্ডে আমার বিচরণ ছিল। আশা করছি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও আমার জেলা আওয়ামীলীগের অভিভাবকরা আমাকে যদি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব প্রদান করেন তাহলে একজন আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান হিসেবে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগকে একটি মডেল ছাত্রলীগে রূপান্তরিত কারার লক্ষ্যে কাজ করব ইনশাআল্লাহ।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী বায়জিদ ইসলাম বলেন, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে আরো গতিময় করতে শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি এই নীতিতে অটুট থেকে জেলা ছাত্রলীগকে এগিয়ে নিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এবং মাদকমুক্ত একটি ছাত্র সমাজ গড়ে তোলাই হবে আমার মূল লক্ষ্য।
জেলা ছাত্রলীগ নেতা ও সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ ফাহাদ হাসান তানিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য দিনভর পরিশ্রম করেছি, হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়াতা দিয়েছি। পারিবারিক সূত্রে বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ সমুন্নত রাখার জন্য রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছি। সেই বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদের জন্য আমিও দাবিদার।
আমি সভাপতি হলে মেধাবী পরিশ্রমী সৎ ও শিক্ষিতরাই ছাত্রলীগে অগ্রধিকার পাবে। তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য নিরলস কাজ করে যাবো। মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক রাজনীতির ছাত্রলীগ গড়ার জন্য আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বদ্ধ।
আমি সভাপতির দায়িত্ব পেলে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করার প্রশাসনের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো ইনশাহ্ আল্লাহ্।
সভাপতি পদপ্রার্থী রেজাউল কবির রেজা বলেন, আমি একজন আওয়ামী পরিবারের সন্তান হিসেবে আন্দোলন সংগ্রামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমার পথ চলা। সৎ, যোগ্য ও মেধাবীরাই প্রাধান্য পাবে বলে বিশ্বাস রাখি।
তিনি আরো বলেন, সভাপতি নির্বাচিত হলে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে এবং আমি আমার ছাত্র সমাজকে নিয়ে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত সমাজ গড়তে ভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করব।
জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও সভাপতি পদপ্রত্যাশী তৌসিফুর রহমান ইমরান বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রণতি ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে অগ্রসৈনিক হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সামগ্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে শিক্ষা শান্তি ও প্রগতির এই আদর্শ বুকে ধারণ করে কাজ করে যেতে চাই।
জেলা ছাত্রলীগের উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সভাপতি পদপ্রত্যাশী সবুজ মোল্লা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ছাত্র সমাজকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি নিরলস। ছাত্রলীগের দুর্দিন ও সুদিনে পাশে থেকেছি এবং থাকবো।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়ন করতে তাঁর প্রতিটি কাজে অংশ থাকবে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের।
জেলা ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ সাইফুল ইসলাম (তুহিন খান) বলেন, ছাত্র সমাজকে নতুন রূপে গড়ে তুলতে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ও শেখ হাসিনার ভীষণকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করব ভিন্ন আঙ্গিকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিটি ছাত্র গড়ে উঠবে দীপ্তময় আলো শিখায়।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্তকারীদের বিরুদ্ধে মাঠে ছিলাম কঠোর অবস্থানে। আজও আছি ভবিষ্যতেও থাকবো। আশা করছি যোগ্যতা ও কঠোর পরিশ্রমকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মহোদয় প্রাধান্য দিবে। তবেই আমি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো।
জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সভাপতি পদপ্রত্যাশী রিশাদ হাসান প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশের মহান স্থপতি বাঙালি জাতির গর্বিত পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জননেত্রী শেখ হাসিনার আদর্শকে বুকে লালন করাই মানে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ। আর এই দেশকে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অনবদ্য। আমি মনে করি যারা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের আন্দোলন সংগ্রামে এগিয়ে এসেছেন, পড়িয়েছেন বিজয়ের মালা তারাই হবে কাঙ্খিত পদের জন্য যোগ্য।
তিনি বলেন, আমি একজন আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও ছাত্রলীগের পাশে থেকে সকল আন্দোলন সংগ্রামে কাজ করেছি নিরলস। আজও কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও কাজ করবো। আমি বিশ্বাস করি বরগুনা জেলার অভিভাবক বৃন্দ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আমাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে নিতে ও মাদক সন্ত্রাস নির্মূলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করব ভিন্ন রূপে, গড়ে তুলব মডেল জেলা ছাত্রলীগ।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেন বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণাঢ্য আয়োজন চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত তারিখেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ইতোমধ্যে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। কেন্দ্র সৎ, যোগ্য, মার্জিত ও শিক্ষিত ব্যক্তিকেই যথাযথ স্থান দিবেন বলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জানান।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে নিয়ে বরগুনা জেলার কৃতি সন্তান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয় বলেন, নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যারা ছাত্রলীগের দুর্দিনে মাঠে থেকেছে, নিজের জীবনকে বাজি রেখে আন্দোলন, সংগ্রামে সরাসরি অবস্থান নিয়েছে, শিক্ষার্থী তথা শিক্ষাঙ্গনকে সুসজ্জিত করতে নিরলস কাজ করে গেছেন, এমন মেধাবী, সৎ, যোগ্য, সাধারণ শিক্ষার্থী ও কর্মীদের মাঝে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদেরকেই নির্বাচিত করা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।