১৬ দিন পর প্রখর রোদে সিলেট


স্টাফ রিপোর্টার
গত ১৫ জুন থেকে ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বন্যার মোকাবিলা করছে সিলেটবাসী। এ কয়দিনে কখনো এ অঞ্চলের নদীর পানি কমেছে; আবার কখনো বেড়েছে।
ফলে চতুর্থ দফা বন্যার শঙ্কায় ছিলেন এ অঞ্চলের মানুষ।

বৃষ্টি-বন্যা মিলিয়ে গত প্রায় ২০ দিনে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সিলেটে রোদের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবারও (১ জুন) বৃষ্টি ঝরেছে এ অঞ্চলে। এর মধ্যে রথ মেলাও অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার সকাল থেকে রোদের দেখা পাওয়া যায় সিলেটে। প্রখরতাও রয়েছে বেশ। সূর্যের উত্তাপে মুখর হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। স্বস্তি ফিরেছে জনমনে।

রোদের কারণে কমছে নদ-নদীর পানি। বন্যার পানি নেমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়া বসতি এলাকাগুলোর মানুষের মনেও স্বস্তি ফিরেছে বলে জানা গেছে।

কড়া রোদ ওঠায় বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজন নিজেদের বস্তাবন্দী ধান শুকাতে দিয়েছেন। গত ২০ দিনের ভেজা কাপড় শুকাতে দিয়েছেন গৃহিণীরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, শনিবার ভোর ৬টার দিকে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বেলা ১২টায় আরও ১২ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে ১৩ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

জকিগঞ্জের অমলশীদে কুশিয়ারা পানি ১৬ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বেলা ১২টার দিকে ২০ সেন্টিমিটার কমে ১৬ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৩৩ অর্থাৎ বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুরে ৬ সেন্টিমিটার কমে এসেছে নদীর পানি। বর্তমানে ১৩ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবহমান রয়েছে।

এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি ভোর ৬টায় ১০ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবহমান ছিল। দুপুরে ৩ সেন্টিমিটার কমে এসেছে। তাছাড়া অন্য নদ নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার নীচে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বৃষ্টি নেই, তারপরও পানি নামছে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যার পানি নামতে পারছে না। যে কারণে সিলেটে ধীর গতিতে পানি কমছে।

গত ১৬ জুন থেকে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট নগরী ও জেলার ৮০ ভাগ এলাকা ডুবে যায়। সুনামগঞ্জে প্লাবিত হয় ৯০ ভাগের বেশি অঞ্চল। সেই সঙ্গে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়।

এবারের বন্যায় অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক ঘরবাড়ি। গবাদিপশু-হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল ভেসে গেছে বানের পানিতে। মানবিক বিপর্যয়ও দেখা দিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোয় ৬ লাখের অধিক পরিবার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। একক সংখ্যা ধরে হিসাব করলে সিলেটের ৬০ লাখ মানুষ এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.