খান নাঈম
বরগুনায় ১০৫ বছরের এক বৃদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। নিজের জমি দখল হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই বৃদ্ধ।
এদিকে বাবার জমিতে ঘর তুলতে গিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে বৃদ্ধার ছেলেরা। ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ছোট লবনগোলা গ্রামে। ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মোসলেম পহলান (১০৫)।
অভিযুক্ত প্রতিবেশীর নাম আবদুস সালাম (সেলিম)। তিনি মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্স বীমা কোম্পানির কর্মকর্তা ছিলেন। দুর্নীতি করার দায়ে তার চাকরিটি চলে যায়। এলাকার আরও কয়েকটি পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ আছে এই আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ২৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে এই এলাকায় আসে আব্দুস সালাম (সেলিম)। অভিযুক্ত সেলিম মোসলেমের সম্পত্তির পাশে একটি জমি ক্রয় করে তবে সেই জমিটি লম্বা হওয়ার কারনে ঘর তুলতে পারছিলো না। পরে বৃদ্ধা মোসলেমের কাছে আসে ৪ সতাংশ জমি ক্রয় করা জন্য, পরে তার কাছে ৪ শতাংশ জমি বিক্রয় করে মোসলেম। এক পর্যায় মোসলেমের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় সেলিম। তার কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে ২১ শতাংশ জায়গা নিয়ে নেয় এবং শর্ত ছিলো যখন মোসলেমের ছেলেরা টাকা ফেরত দিবে সাথে সাথে ওই জমি ফিরিয়ে দেয়া হবে। শর্তানুযায়ী ওই জমি ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়নি সেলিম। মোসলেমের ছেলেরা বাড়িতে এসে ওই ২১ শতাংশ জমি বাদে অন্য যে জমি আছে সেখানে ঘর তুলতে চাইলে বাঁধা দেয় সেলিম।
পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করে আসছে মোসলেমের পরিবারকে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার গন্যমান্যরা শালিশ বৈঠক করে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলো অভিযুক্ত সেলিম তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। এমন অবস্থায় নিজেদের পৈতৃক জমিতে ঘর তুলতে পারছে না মোসলেম পহলানের ছেলে আবু সালেহ।
বৃদ্ধ মোসলেম পহলান বলেন, সেলিম এখানে আসার পর থেকে বিভিন্নভাবে আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ধাপে ধাপে আমার ২১ শতাংশ জমি নিয়ে গেছে। ফেরত দেয়ার শর্তে আমি তাকে জমি দিছি। শর্তের লিখিত কাগজ আছে আমার কাছে। তবুও সে আমার জমি ফেরত দিচ্ছে না। উল্টো আমার অন্য জমিতে ঘর তুলতেও বাঁধা দিচ্ছে। বিভিন্ন সময় পুলিশ দিয়ে হয়রানি করাছে আমাদের।
এই জমিটুকু ছাড়া আমার আর জমি নেই। এখন আমার ছেলেরা ঘর তুলতে পারছে না। আমি এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
এবিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মদ বলেন, এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।