স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পর থেকেই চার বছর ধরে ইউপি ভবনে পাঠদান

তালতলী প্রতিনিধি

বরগুনার তালতলীতে নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নিলামে বিক্রি করা হয় ২০১৯ সালে। তারপর থেকে চার বছর যাবৎ পাশেই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কয়েকটি রুমে চলছে পাঠদান। পরিষদে জনসমাগম কার্যক্রম থাকলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়।

জানা যায়, ২১ নং নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪৩ সালে স্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ বছর পরে ২০১৮ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে নিলামে ভবনটি বিক্রি করা হলে পার্শ্ববর্তী শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সাময়িক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। চার বছর ধরে পাঁচটি শ্রেণীর পাঠদান চলছে এই ইউপি ভবন কক্ষে। বর্তমানে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ২৬২ শিক্ষার্থীর জায়গা হচ্ছে না এ ভবনে। কিছু ছাত্র-ছাত্রী কক্ষে ও কিছু বারান্দায় বসিয়ে পাঠদান চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এর আগে গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে দেড় লাখ টাকা বরাদ্ধ পেলে সেই টাকা দিয়ে ইউপি ভবনের নিচ তলাসহ সাময়িক পাঠদানের জন্য টিনশেড দিয়ে বেড়া দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে ইইনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমের কারণে পাঠদানের কোনো পরিবেশ নেই। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীসহ অবিভাবকরা দ্রুত স্কুল ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুহান, ইমরান ও হাফিজুর বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পিএসসি পরীক্ষার ফলাফল খুবই ভালো। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা কার্যক্রমে উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার আমাদের এই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ভবন না থাকায় আমাদের অনেক কষ্ট করে পাঠগ্রহণ করতে হচ্ছে। দ্রুত আমাদের ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হোক। তাহলে আমাদের পাঠদান ভালো ভাবে হবে।

একাধিক অভিবাবকরা বলেন, দ্রুত ভবন নির্মাণ না করলে বৃষ্টির দিনে আমাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই স্কুল ভবনটি নির্মাণের দাবি করছি।

নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, গত চার বছর আগে আমাদের স্কুল ভবন নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। এরপর থেকেই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে পাঠদান শুরু করি। এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করাতে খুব কষ্ট হয়। বৃষ্টির দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দ্রুত আমার বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণের দাবি করছি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম জানান, বিদ্যালয়টির ভবন না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে ঠিকই। তবে এক তলা বিশিষ্ট একটি ভবন বরাদ্দ হয়ে আছে। এখন কেবল নির্মাণের অপেক্ষায়।

তিনি আরও বলেন, দুই তলা ভবন বরাদ্ধ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত বরাদ্দ পাওয়া যাবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম সাদিক তানভীর বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো এবং দ্রুত ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা করব।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.