বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে বরগুনায় পানি শুনানি সুপেয় পানির তীব্র সংকটে জনজীবন দুর্ভোগে

স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্ব পানি দিবস ২০২৩ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে দশটার দিকে বরগুনার জাগোনারী ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ সেন্টারে পানি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পানি অধিকার প্রচারাভিযান ওয়াটারম্যুভ ক্যাম্পেইনের আওতায় জাগোনারী, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রাণ এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই শুনানিতে সুপেয় পানি সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী, নাগরিক আন্দোলনের কর্মী, গণমাধ্যম কর্মী, এনজিও প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, উপকূলে জলবায়ু ও পানি সংকট নিয়ে ৫০ এরও অধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ঝ মোতালেব মৃধার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাইসুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- হাসানুর রহমান ঝন্টু , হিমাদ্রী শেখর কেশব, জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা সহ সিনিয়র সাংবাদিক বৃন্দ।

পানি শুনানিতে পানি সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর পক্ষে টেস্টিমনি উপস্থাপন করেন কমিউনিটির পাঁচ নারী ও পুরুষ। সুপেয় পানি সংকট কীভাবে তাদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে, এ বিষয়ে তারা তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বেঁচে থাকার জন্য দৈনিক প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহে তাদের সংগ্রামের কথা জানান তারা। জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে উপকূলীয় বরগুনায় পানীয় জলের সংকট সময়ের সাথে সাথে তীব্র আকার ধারণ করেছে, জনজীবনে যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে পানি সংগ্রহ করতে দূর-দুরান্তে গিয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয়, কলস, ড্রামের মত পানি সংরক্ষণের ভারী আধার বহন করার ফলে শারীরিক নানা অসুস্থতা, বাধ্য হয়ে লবণাক্ত ও দূষিত পানি পানের ফলে উচ্চরক্তচাপ, পেটের পীড়া, হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি, শিশুমৃত্যু, গর্ভবতী নারীদের খিঁচুনি, অকালগর্ভপাত ও উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি সংকট। আবার লবনাক্ততাজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় এবং প্রয়োজনীয় পানীয় জল কিনতে গিয়ে পরিবারগুলোর উপর রয়েছে অতিরিক্ত খরচের বোঝা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, সুপেয় পানির সাথে সকল মৌলিক অধিকারসমূহ ওতপ্রোভাবে জড়িত। বাংলাদেশের উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানির অনিশ্চয়তা কীভাবে অন্যান্য মৌলিক অধিকারকে ব্যাহত করছে, এই শুনানির মধ্যে দিয়ে তা ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে সরাসরি জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা আগামীতে পরিকল্পনা গ্রহণে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সকলের সুপেয় পানি ও দৈনন্দিন সকল কাজে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনমানুষের সুবিধা-অসুবিধাকে অগ্রাধিকার বিবেচনা করে অঞ্চলভিত্তিক সংকটের ভিত্তিতে সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের আশু দাবি জানান তারা।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.