চিকিৎসা সংকট অবসানে বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম’র মানববন্ধন ও স্মারকপত্র প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার

বরগুনার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ভবনে কার্যক্রম শুরু, চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগসহ চিকিৎসা সংকট অবসানের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধান মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে স্মারকপত্র প্রদান করা হয়েছে।

বরগুনার নাগরিক সমাজের পক্ষে বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম’র আয়োজনে ও বাংলাদেশ হেলথ্ ওয়াচ্ এবং স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারীর সহযোগিতায় সোমবার (০৭ নভেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে স্মারকপত্র প্রদান করা হয়।

এসময় বক্তব্য রাখেন, বরগুনা প্রেসক্লাব’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সোহেল হাফিজ, সাবেক সভাপতি মনির হোসেন কামাল, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সদস্য আলহাজ্ব আ: রব ফকির, অন্বেষা’র নির্বাহী পরিচালক শামস উদ্দিন খান।

বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম’র সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টুর সভাপতিত্বে ও জাগোনীর’র উপনির্বাহী পরিচাল ডিউক ইবনে আমিন’র সঞ্চালনায় এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন, স্থানীয় বিভিন্ন উন্নয়ন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধন শেষে ০৭ (সাত) দফা দাবি উল্লেকপূর্বক প্রধান মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে স্মারকপত্র পাঠাতে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের হাতে স্মারকপত্র তুলে দেওয়া হয়।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) জালাল উদ্দীন, (সার্বিক, শিক্ষা ও আইসিটি) ফয়সাল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকপত্রে উল্লেখ করেন, দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় জনপদ বরগুনার ১৫ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র নির্ভর স্থান বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল। ২৫০ শয্যার ভবন উদ্বোধন চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ভবনটিতে কার্যক্রম শুরু হয়নি।

করোনার সময় রোগীর চাপ সামাল দিতে এখানে (নতুন ভবন) চিকিৎসা দেয়া হয় করোনা রোগীদের। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমতলী তালতলী এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরই নির্বাচনী এলাকার জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতাল নিজেই অনেক বছর ধরে অসুস্থ।

২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর তালতলী উপজেলা সফরকালীন বরগুনা জেলা সদরে ১০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালকে ২৫০ শ’ শয্যার হাসপাতাল ভবন উদ্বোধন করেন তিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ভবন উদ্বোধনের চার বছরের বেশি অতিক্রম হলেও এখন পর্যন্ত এই ভবনে সে বা কার্যক্রম শুরু হয়নি।

এরই লক্ষ্যে সাত দফা দাবি নিয়ে বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করে। তাদের সাত দফা দাবির মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ আরবিংশ শয্যার জনবল পদায়ন সহ চিকিৎসকদের শূন্য পদ পূরণ, নীতিমালা অনুসারে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়োগ ও পদায়ন, ১০০ শয্যার হাসপাতালে ২০০ থেকে ২৩০-৪০ জন রোগী ভর্তি থাকলেও খাবার বরাদ্দ ১০০ জনের। আড়াইশ জন রোগীর অনুকূলে খাবার বাজেট, জন প্রতি তিন বেলা খাবারের জন্য ১২৫ টাকা বরাদ্দ। সেখানে ভ্যাট সহ বিবিধ কেটে জনপ্রতি ১০৫ টাকা থাকে। তিন বেলা ১০৫ টাকা দিয়ে খাবার দেয়া যায় কি? তাই আড়াইশ’ শয্যার আবাসিক রোগীদের খাবার বরাদ্দ বাজার মূল্য বৃদ্ধি বিবেচনায় বাড়ানোর দাবি, আড়াইশ’ শয্যার হাসপাতালে ২০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী থাকার বিধি থাকলেও বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে একজন মাত্র পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছে। একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী কি করে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখে? তাই বিধি মোতাবেক পরিচ্ছন্ন কর্মী পদায়ন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর উপহার নিয়ন্ত্রিত আধুনিক এম্বুলেন্স চলতি বছরের ১০ মে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাদ্দ দেয়।

বিধিতে এম্বুলেন্স চালক একজন স্বাস্থ্য সহকারী এবং জ্বালানি বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও তা বরাদ্দ দেয়া হয়নি। একটি আধুনিক এক্সরে মেশিন দেয়া হলেও অপারেটর দেয়া হয়নি কেন আমরা এত অবহেলিত?

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.