স্টাফ রিপোর্টার
একজন ইউপি সদস্য দায়িত্বে থাকাকালীন গড়েছেন অভিযোগের পাহাড়। স্থানীয়রা এমন অভিযোগ তুলেছেন বরগুনার তালতলী উপজেলার ৭নং সোনাকাটা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিজাম মীরের বিরুদ্ধে ।
যেকোন ধরনের সেবা পেতে জনগণকে দিতে হয় ঘুষ। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে থাকায় প্রতিবাদ করতে পারছেন না এলাকাবাসী। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে হামলা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে রাখে। এমনকি সরকার থেকে বরাদ্দকৃত মালামাল নিজ জিম্মায় রেখে বিক্রিও করে যাচ্ছেন নিয়মিত।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে ২৬ মে বৃহস্পতিবার রাত ১০.৪০টার দিকে গুচ্ছগ্রামের একটি বাড়িতে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বরাদ্দকৃত সার ও বোরো ধান সহ বিভিন্ন প্রজাতীর বীজ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সময় জনতা আটক করে প্রশাসনকে খবর দিলে তালতলী থানা পুলিশ গিয়ে মালামাল জব্দ করে।
সার ও বীজের বস্তা পুকুরের পাড় ও খালের পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়। বস্তা নিয়ে দুইজনকে গ্রামের লোকজন দেখে ফেললে বস্তা রেখে সাতার কেটে খাল সাতরে পালিয়ে যায়।
তবে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বরং তাদেরকে বাচাঁতে সাংবাদিক ও স্থানীয় জনগণের সামনে একটি অলিখিত সাদা কাগজে সাক্ষী হিসাবে স্বাক্ষর নেয় পুলিশ।
এদিকে পরের দিন সকালে পুলিশকে অভিযানে সহায়তাকারী লোকজনের মধ্যে রুহুল আমিন বাজারে শাক বিক্রি করতে গেলে অভিযুক্ত নিজাম মীর ও তার দলবল তাকে গালিগালাজ করে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাজার থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং অপর যারা ছিল তাদেরকেও খুনের হুমকি দেয়।
নিজাম মীর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি। আওয়ামীলীগের দাপট দেখিয়ে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। জুয়ার আসর থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার অনৈতিক কর্মকান্ড দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন এলাকায়। ২০১৮ সালে জুয়ার আসর থেকে গ্রেফতার হয়ে জেলেও যান তিনি। জেল থেকে বেরিয়েও সকল বে-আইনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কোন প্রতিবাদ করলে তার মেয়েদেরকে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
অভিযান পরিচালনা করাকালীন সময় দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এ্যাচি অং এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন – মালামাল নিজাম মীরকে জানিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জাফর নামের একজনকে পাঠিয়ে আমার নিকট হতে মালামাল ৩দিন আগে নিয়ে গেছেন।
সার ও বীজ কাউকে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এটার নিয়মের বহিঃর্ভুত। তবে বিতরণ করা পর্যন্ত মালামাল ট্যাগ অফিসার ও আমার জিম্মায় থাকবে।
নিজাম মীরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন- সার সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন- সার ও বীজ জাফর নামের এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসার জন্য বলেছি। এ ব্যপারে জাফর জানে।
জাফর তালুকদারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন- ৩ দিন আগে মালামাল এনে রেখে ঘর তালা দিয়ে আটকে রাখি। মালামালগুলো কেন বাহিরে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন- আমি জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন- উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।