তালতলী প্রতিনিধি
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার নামে সাবেক এক ছাত্রশিবির নেতা। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইতোমধ্যে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার তালতলীর পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চন্দনতলা গ্রামের মৃত কাশেম হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ঢাকার সূত্রাপুর থানা শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। রাজ্জাকের স্ত্রীর আপন বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হওয়ার সুবাদে সকল দলীয় সুযোগ-সুবিধা পেতে থাকেন তিনি। এমনকি উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদও পান রাজ্জাক। গত ২০১৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। তবে অনুপ্রবেশকারী হওয়ায় তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
আগামী ১৫ জুনের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে গত (৬ মে) ৫ জনের নাম প্রস্তাব করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। ৫ জনের মধ্যে সাবেক জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারেরও নাম প্রস্তাব করেছে কিছু নেতাকর্মী। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খোকন হাওলাদার বলেন, রাজ্জাক হাওলাদার শিবিরের উচ্চ পদে ছিলেন। উপজেলার প্রতিটা মানুষ জানে। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় অনুপ্রবেশকারী রাজ্জাক নৌকা চেয়েছেন। তাহলে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা হয়ে লাভ কী? রাজ্জাকের মতো লোক দলীয় মনোনয়ন চাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ত্যাগী নেতারা ক্ষুব্ধ।
তিনি বলেন, আমার বাবা আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। আমি ছাত্রলীগ করেছি যুবলীগ করেছি এবং পরপর দুইবার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। আজকে আওয়ামী লীগের ত্যাগী যারা নেতা তাদের কোন মূল্যায়ন নেই। চলছে ভোট বাণিজ্য মনোনয়ন বাণিজ্য। ত্যাগী নেতাদের কোনো জায়গা নেই।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমার যখন কোনো বিজয় আসে, তখনই প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার পাঁয়তারা চলছে
তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু জানান, রাজ্জাক জামায়াত-শিবির করতেন কিনা জানা নেই, তবে তিনি এক সময় জাতীয় পার্টি করতেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তার মতো অনুপ্রবেশকারী কীভাবে মনোনয়ন চান সেটা আমার বোধগম্য নয়।