বরগুনায় মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় স্কুল ছাত্রী সহ আহত-৪

রাসেল হাওলাদার

মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বরগুনা সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের আশ্রায়ন কেন্দ্রে ঘরে ঢুকে মারধর করেছে মাদক সেবীরা।

মারধরে আহত হয়েছেন, মো: মিজান (২৮), স্কুলছাত্রী সানজিদা (১৫), লিমা (১২), গৃহবধূ মোসা: ফাতিমা (৩৫)।

আহতদের গুরুতর অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মাদক সেবন ও হামলা কারীরা হলেন ওই একই এলাকার বাবুলের ছেলে মো: নাসির (২৮), মো: বশির (৩১), আব্দুর রবের ছেলে মো: নাইম (২৭) ও মো: শান্ত (২৮)।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল ) রাত ১০টার দিকে খেজুরতলা আশ্রায়ন কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

আহত মোসা: ফাতিমা বলেন, আমরা ঘরের মধ্যে বসে কথা বলছি এমন সময় শান্ত, নাইম এসে আমার ভাই মিজানকে বলে আপনি একটু ঘরের বাইরে আসেন, তখন আমি বলছি ও ঘরের বাইরে যাবেনা, এই বলার পর বশির, আর নাসির ঘরে ঢুকে মাইরধইর শুরু করে। নাসির আমার ভাইকে জামার কলার ধরে টেনে বাইরে নামিয়ে গাছের চলা দিয়ে চার জন মিলে পিডান শুরু করে। পিডায় আর কয় মোরা বলে গাঁজা খাই ইয়াবা বেছি হেইয়া বলে তুই কও আর পুলিশে দরাইয়া দিবি বলে, তোর বাপেরে ফোন দে।

আমি আর আমার দুই মেয়ে মারামারি থামাতে গেলে আমাদেরও ইচ্ছা মতো চলা দিয়ে পিডায়। স্থানীয় লোক জন ধরতে আসলে তাদেরও মারধর করে পালিয়ে যায়।

আহত ফাতিমার স্বামী ইমরান বলেন, আমি নামাজ পরতে মসজিদে গেছি, ফোন পেয়ে বাড়ি এসে দেখি আমার শ্যালোক, বউ, ও মেয়েদের মেরে ঘরের সামনে ফেলে রেখেছে। ওদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য ঘরে টাকা আনতে গিয়ে দেখি নগদ ৩০ হাজার টাকা আমার মেয়ের কানের জিনিস দেখিনা। আমি স্থানীয় কয়েক জনকে ডেকে এনে দেখিয়ে ওদের নিয়ে হাসপাতালে যাই।

স্থানীয় বাসিন্দা শারমিন বলেন, আমরা মারামারির শব্দ শুনে দৌড়ে এসে দেখি নাসির, বশির, আরো দুইটা ছেলে মিজানরে তার বোনকে মারতেছে। আমি আর আমার ভাই মারামারি ঠেকাতে গেলে নাসির আমার পিঠে ঘুষি দেয় আমার চুল ধরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আর আমার ভাইয়ের হাতে বশির লাঠি দিয়ে বারি দেয়। এখানে আনেক লোক ছিল কেউ মারামারি থামাতে আসেনি। কারন যেই আসে তাকেই মাইর শুরু করে।

এলাকাবাসি আরো জানান, রাত হলে আমরা কেউ এদের ভয়ে বাহিরে নামতে পারিনা। রাত হলেই আশ্রায়ন এদের দখলে চলে যায়। বিভিন্ন এলাকার লোকজন এসে আশ্রায়নের মধ্যে বসে মাদক সেবন করে। আমাদের সন্তানদের নিয়ে বিপদের মধ্যে আছি। এরকম চলতে থাকলে যে কোন সময় মাদক আসাক্ত হতে পারে। এরা সব সময় মারামারি করে এদের ভয়ে কেউ কোন কথা বলেনা। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই আশ্রায়ন যেনো মাদক মুক্ত হয়।

অভিযুক্ত নাসির মাদকের কথা অস্বীকার করে বলেন, অনেক দিন ধরে মিজান আমার বউকে অনৈতিক ভাবে খারাপ প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমার বউকে নিষেধ করা সত্যেও ভিন্নভাবে ভয়ভিতী দেখিয়ে, মিজান বলে আমার প্রস্তাবে রাজি না হলে তোমার ভাই সহ তোমার স্বামীকে মাদক দিয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিব। আমার বউয়ের কাছে শোনার পরে মিজানের কাছে জিজ্ঞাসা করতে গেলে আমার সাথে তর্ক শুরু করে। এক পর্যায় মিজান আমার উপর হামলা করে। আমি আমার ভাই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। আমার হাত ভেঙ্গে গেছে। আর ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Spread the love
       
 
 
    

Leave a Reply

Your email address will not be published.