স্টাফ রিপোর্টার
পূর্ণিমার জোয়ারে বিশখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চলের ২০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়ীয়ায় ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে এখনও ঢুকছে জোয়ারের পানি। দিনের পর দিন প্লাবিত হওয়ায় শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট শুরু হয়েছে প্লাবিত গ্রামগুলোতে।
শনিবার (১৬ জুলাই) বিষখালি নদীতে পানি বেড়ে বিপদ সিমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির খোঁজে গ্রামের পর গ্রাম ছুটতে দেখা গেছে শতাধিক মানুষকে। গ্রামগুলোর অধিকাংশ ডিপ টিউবওয়েল পানির নিচে তলিয়ে থাকায় উঁচু স্থানের টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছে সবাই। নদী ও খালের পানি দূষণের কারণে রান্নার পানির সংকটও দেখা দিয়েছে। জোয়ারের পানি নামতে না নামতেই আবারো পানি উঠে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম।
নিদ্রাসকিনা গ্রামের আকলিমা বেগম বলেন, ঘরে ৪ দিন যাবত চুলা জ্বলছে না। পানি এখনো কমে নাই। পরিবারে বৃদ্ধসহ তিন শিশু রয়েছে এদের নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছি।
তালতলীর তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের ৬০ বছরের বৃদ্ধা খাদিজা বেগম বলেন, পরিবারের সদস্যদের জন্য পাসের এলাকার নিকটতম স্বজনদের বাড়ি থেকে ৪ দিন ধরে খাবার আনছি। এলাকার অধিকাংশ টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লবন পানি ঢুকে পরেছে টিউবয়েলে। তাই খাবার পানি সংকটে এখন হাজারো মানুষ।
বরগুনা সদর উপজেলার মাঝের চর এলাকার বাসিন্দা ইয়াসিন আলী বলেন, ঘরের অর্ধেক তলিয়ে থাকায় আশ্রয় নিয়েছেন পাটাতনের উপরে। ঘরে যে শুকনো খাবার ছিলো তাও এখন শেষ। এখন খাবারের সন্ধানে ছুটছেন গ্রামের এখানে ওখানে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপকারী মাহাতাব হোসেন জানান, খাকদোন নদীর পানি পরিমাপ করে দেখা গেছে বিপদসিমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহীত হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপকারী মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, পয়রা নদীর বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, যে সকল জায়গায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে। সেগুলো সংস্কার এবং পানি কমে গেলেই তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বাঁধ দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালতলী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সাদিক তানভীর জানান, এখন পর্যন্ত ১০৭ টি পরিবারকে শুকনো খাবার প্রদান করা হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে।